বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন
কলাপাড়া -মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পর্যটকের কথা চিন্তা করে ৫ বছর আগে লিটনের এই মহৎ উদ্যোগ ।
ভ্রমণ শেষে ক্লান্ত শরীর আর ক্ষুধা নিয়ে ঘুরতে আসা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের পেট পুরে খেতে গরুর মাংসের সঙ্গে থাকে হরেক রকম সবজি কিংবা ভর্তা। আর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মানসম্মত বক্সভর্তি এমন খাবার সরবরাহ করা হয় । কেবল একশ টাকাই নয়, ৮০ টাকায় মুরগির মাংস আর মাত্র ৭০ টাকায় এই দোকানেই মিলছে দেশি মাছ। যা পয়সা দিয়ে কিনে নয়, ফ্রিতেই দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের।দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কুয়াকাটায় যুবকের খাবার হোটেল ঘর। দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতি থাকলেও সকলের নজর কেড়েছে লিটনের ব্যতিক্রমী এই খাবার ঘরটি। ২০১৮ সাল থেকে কুয়াকাটা জিরোপয়েন্ট এলাকায় মসজিদ সংলগ্ন এই দোকানটি পরিচালনা করছেন লিটন। তবে স্থানীয় দোকানসহ পর্যটকদের কাছেও এখন বেশ সুনাম কুড়িয়েছে তার ঘরের রান্না।
প্রতিদিন দুপুরে এই হোটেল থেকে শতাধিক ভাতের বাটি সরবরাহ করা হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে। আর খাবার ঘরে বসে সাচ্ছন্দ্যে ক্ষুধা নিবারন করেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। তবে ক্রেতাদের নজর কেড়েছে লিটনের বক্সভতি খাবার পরিবেশনের অভিনব পদ্ধতি। বালুময় এলাকায় ধূলা, মশা-মাছির কবল থেকে খাবার সুরক্ষিত রাখতে বক্সের বিকল্প নেই বলছেন ক্রেতারা। আর সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে লিটনের নিজ বাড়িতেই এসব খাবার রান্না করেন লিটনের স্ত্রী রোজী আক্তার।
বরিশাল থেকে আসা পর্যটক মশিউর রহমান জানান, বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে কুয়াকাটায় এসেছেন তিনি। তবে বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল ঘুরে এই দোকানে এসে অবাক হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এতো কম মূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাব, তা আসাও করিনি। তার বন্ধুরা জানান, একেবারে বাড়ির রান্নার স্বাদ পেয়েছি এই হোটেলে।
স্থানীয় দোকানি নাহীদ বলেন, লিটনের খাবার হোটেলের মান খুবই সুন্দর এবং কোনো বাসি খাবার এখানে থাকে না। এটাই একটা ভালো দিক।খাবার দোকানের পরিচালক লিটন খান জানান, কুয়াকাটায় এক সময়ে রেন্ট-এ কারের ব্যবসা ছিল তার। তবে লোকশানে হওয়ায় বিকল্প চিন্তা নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এখন প্রতিদিন ক্রেতাদের অর্ধেক চাহিদাও মেটাতে পারছেন না। গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪শ বাটি খাবারের চাহিদা থাকলেও তার অর্ধেক চাহিদা পূরণ করছে লিটন।
লিটন আরো জানান, প্রতিদিন তার খাবার তালিকায় একশ টাকায় গরুর মাংস, ৮০ টাকায় মুরুগি এবং ৭০ টাকায় মাছ দিয়ে খাবার বিক্রি করা হয়। সঙ্গে ক্রেতাদের জন্য সবজি, ভর্তা এবং ডাল দিচ্ছেন তিনি। মাছের মধ্যে তেলাপিয়া, রুই, পোয়া ও টেংরাসহ প্রভৃতি প্রজাতির মাছ দিয়ে থাকেন খাবারে। তবে গরুর মাংস ৪-৫ টুকরা হলেও মুরগি এবং মাছ সঠিক পরিমাণে দেওয়া হয়। এছাড়া ফ্রিতে সবজি, ভর্তা এবং ভাত ইচ্ছেমতো খেতে পারেন ক্রেতারা।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, স্বল্পমূল্যে মাছ ও মাংস দিয়ে দুপুরের খাবার বিক্রি করে থাকেন লিটন। কিন্তু কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। সবাই ওই দোকানের খাবার খেয়ে সন্তুষ্ট। সব শ্রেণির মানুষ ওই দোকানে খাবার খেয়ে খুশি বলে জানতে পেরেছি।